আপনার হোয়াটসঅ্যাপ কেউ লুকিয়ে ব্যবহার করছে কিনা জানার উপায়

Wbscheme Whatsapp Group Link
Join Wbscheme Telegram Channel

আপনার হোয়াটসঅ্যাপ কেউ লুকিয়ে ব্যবহার করছে কিনা জানার উপায়

মেটার সবচেয়ে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। বিশ্বের কয়েকশ কোটি মানুষ এই অ্যাপের উপর তাদের ভরসা রাখেন। এই মাধ্যমটি এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপটেড হওয়ায় ব্যবহারকারীর চ্যাট ও কল থাকে সম্পূর্ণ সুরক্ষিত।

হোয়াটসঅ্যাপ নিজেই দাবি করছে, চাইলে তারাও গ্রাহকের মেসেজ পড়তে পারেন না। তবুও প্রশ্ন থেকে যায়, এত নিরাপত্তার পরেও কি হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক করা যাবে? উত্তর হচ্ছে, হ্যাঁ, হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক হতে পারে।

হ্যাকাররা বিভিন্ন উপায়ে হোয়াটসঅ্যাপে প্রবেশ করতে পারে। যদিও এই পদ্ধতিগুলোকে সরাসরি হ্যাকিং বলা যাবে না, তবুও হ্যাকাররা ব্যবহারকারীদের ধোঁকা দিয়ে অ্যাপটিতে প্রবেশ করতে সফল হয়।

হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকিংয়ের পদ্ধতি: 

প্রতারণার মাধ্যমে Verification কোড নেয়া :

হ্যাকাররা প্রথমেই প্রতারণার মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে যাচাইকরণ কোড নেয়। সাধারণত কোনো ফিশিং মেসেজ বা কলে আপনাকে বলা হয় যে আপনার অ্যাকাউন্ট যাচাইকরণ করা হচ্ছে এবং কোডটি শেয়ার করতে বলা হয়। কোডটি শেয়ার করলে হ্যাকার আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়।

স্পাইওয়্যার ব্যবহার

হ্যাকাররা স্পাইওয়্যার ব্যবহার করেও আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারে। এই স্পাইওয়্যারগুলো আপনার ফোনের ডেটা সংগ্রহ করে এবং তা হ্যাকারদের কাছে পাঠিয়ে দেয়।

ম্যালওয়্যার লিঙ্ক পাঠানো

হ্যাকাররা একটি ম্যালওয়্যার লিঙ্ক পাঠিয়ে আপনার ফোনে প্রবেশ করতে পারে। এই লিঙ্কে ক্লিক করলে আপনার ফোনে ম্যালওয়্যার ইনস্টল হয়ে যায় এবং হ্যাকার আপনার ডেটা সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়।

ক্লোন করা

হ্যাকাররা আপনার ফোন বা হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট ক্লোন করে আপনার চ্যাট ও অন্যান্য তথ্য অ্যাক্সেস করতে পারে।

হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে বুঝবেন যেভাবে

  • আপনি এমন বার্তা দেখতে পারেন যা আপনি পাঠাননি।
  • প্রোফাইল ফটো বা নাম পরিবর্তন হতে পারে।
  • বিভিন্ন ডিভাইস থেকে লগইন হতে দেখা যাবে।
  • অপরিচিত নম্বর থেকে কল আসা-যাওয়া দেখা যেতে পারে।

হোয়াটসঅ্যাপ সুরক্ষিত রাখার উপায়

Verification কোড শেয়ার না করা

আপনার রেজিস্ট্রেশন কোড বা ভেরিফিকেশন পিন কখনই অন্য কারো সঙ্গে শেয়ার করবেন না। এটি হ্যাকারের হাতে গেলে আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারবে।

টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন অন করা

টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন অন করে রাখুন এবং একটি ই-মেইল ঠিকানাও প্রদান করুন। আপনি পিন ভুলে গেলে এটি পুনরুদ্ধারের জন্য উপযোগী হবে। টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন অন করতে হোয়াটসঅ্যাপ সেটিংসে যান, ‘অ্যাকাউন্ট’ নির্বাচন করুন এবং ‘টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন’ অন করুন।

ভয়েসমেইল পাসওয়ার্ড সেট করা

আপনার ফোনে একটি ভয়েসমেইল পাসওয়ার্ড সেট করুন। এতে করে আপনার ভয়েসমেইল সুরক্ষিত থাকবে এবং হ্যাকাররা সহজে অ্যাক্সেস করতে পারবে না।

সুরক্ষিত ডাউনলোডের নিয়ম মানা

অ্যানড্রয়েড মোবাইলে গুগল প্লে-স্টোর এবং অ্যাপল অ্যাপ স্টোর ছাড়া হোয়াটসঅ্যাপ ডাউনলোড করা একদমই উচিত নয়। অন্যান্য উৎস থেকে ডাউনলোড করলে আপনার ফোনে ম্যালওয়্যার বা স্পাইওয়্যার ইনস্টল হয়ে যেতে পারে।

হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারের সময় প্রযুক্তিগত সতর্কতা

  • অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করুন যা স্পাইওয়্যার এবং ম্যালওয়্যার সনাক্ত করতে সক্ষম।
  • আপনার ফোনের অপারেটিং সিস্টেম এবং অ্যাপস আপডেট রাখুন। নতুন আপডেটগুলি প্রায়শই সুরক্ষা উন্নত করে।
  • নিরাপদ ব্রাউজিং পদ্ধতি অনুসরণ করুন এবং অজানা লিঙ্কে ক্লিক করবেন না।
  • অপরিচিত লোকদের থেকে মেসেজ বা কল গ্রহণ করার সময় সতর্ক থাকুন।

উপসংহার

আপনার হোয়াটসঅ্যাপ নিরাপদ রাখতে এবং হ্যাকিং মুক্ত রাখতে উপরের নিয়মগুলি অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে হ্যাকারদের পদ্ধতিও উন্নত হচ্ছে। তাই সজাগ থাকা এবং সঠিক নিয়ম মানা একান্ত প্রয়োজন। এতে করে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত থাকবে এবং আপনি নিশ্চিন্তে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করতে পারবেন।

মন্তব্য করুন